গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক বক্তব্যে সান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মেরি ডালি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নীতিনির্ধারকরা শিগগিরই সুদের হার কমানোর জন্য প্রস্তুত হবেন এবং তিনি আরও যোগ করেছেন যে শুল্কজনিত মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব সম্ভবত সাময়িক হবে।
শুক্রবার ডালি বলেন, "খুব শিগগিরই নীতিমালা সমন্বয়ের করা হবে, যাতে এটি আমাদের অর্থনীতির চাহিদার সাথে আরও ভালোভাবে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।" তিনি উল্লেখ করেন যে শুল্কের কারণে মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধি "সাময়িক ঘটনা" হবে। "এ ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানতে আমাদের সময় লাগবে। তবে আমরা অপেক্ষা করতে পারছি না, কারণ এতে শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।"
ডালির এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বৈশ্বিক অর্থনীতির সাথে যুক্ত মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বহু অর্থনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারী ক্রমবর্ধমানভাবে আশঙ্কা করছেন যে বাড়তি শুল্ক ভোক্তা ব্যয় ও বিনিয়োগ কমাতে পারে, যা পরবর্তীতে জিডিপির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মার্কেটের ট্রেডাররা ডালির মন্তব্যকে ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতি নমনীয়করণের সম্ভাব্য ইঙ্গিত হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। ট্রেডাররা আশা করছেন যে সুদের হার হ্রাস করে হলে সেটি অনিশ্চয়তার মধ্যে অর্থনীতিকে সমর্থন দিতে সহায়তা করবে। তবে এটি উল্লেখযোগ্য যে ফেডের অন্যান্য কর্মকর্তারা এখনও এতোটা স্পষ্টভাবে সুদের হার হ্রাসের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেননি। বরং তাঁরা আসন্ন সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল মূল্যায়ন করে অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণের অবস্থান বজায় রাখতে চাইছেন।
এই বছর প্রতিটি বৈঠকে ফেড মুল সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে, যা 4.25–4.5% রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। ডালির মন্তব্য ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি ঘটিয়েছে, যিনি জ্যাকসন হোল সিম্পোজিয়ামে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সেপ্টেম্বরের নীতিনির্ধারণী বৈঠকেই সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনা উন্মুক্ত রয়েছে, কারণ সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তীব্র মন্থরতার ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।
ডালি বলেন, "কংগ্রেস ফেডকে দুটি লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে: পূর্ণ কর্মসংস্থান এবং মূল্যস্ফীতির স্থিতিশীলতা। বর্তমানে এই দুটি লক্ষ্যমাত্রাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে: শুল্ক আরোপের ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, আর শ্রমবাজার পরিস্থিতির দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।"
নীতিনির্ধারকরা এখনও ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বাণিজ্যনীতির পরিবর্তনের অর্থনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন। গত শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে জুলাই মাসে পারসোনাল কনজাম্পশন এক্সপেন্ডিচার (PCE) সূচক টানা চতুর্থ মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার লক্ষণ নিশ্চিত করছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সান ফ্রান্সিসকো ফেডের প্রধানের এই বছর মুদ্রানীতি বিষয়ক সিদ্ধান্তে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই।
EUR/USD: ক্রেতাদের এখন এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1715 লেভেল ব্রেক করাতে হবে। কেবল তখনই পেয়ারটির মূল্য 1.1750 লেভেল টেস্ট করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে। সেখান থেকে 1.1780-এর দিকে মূল্যের মুভমেন্টের সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও বড় বিনিয়োগকারীদের সহায়তা ছাড়া এটি করা বেশ কঠিন হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.1820 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য মূল্য হ্রাস পায়, তবে আমি কেবলমাত্র মূল্য 1.1685 লেভেলের আশেপাশে থাকা অবস্থায় বড় ক্রেতাদের সক্রিয়তার প্রত্যাশা করব। যদি সেই লেভেলে কোনো ক্রেতারা সক্রিয় না হয়, তবে পুনরায় এই পেয়ারের মূল্যের 1.1655 লেভেলের টেস্ট হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত হবে, অথবা 1.1630 থেকে লং পজিশন ওপেন করার কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
GBP/USD: পাউন্ডের ক্রেতাদের এই পেয়ারের মূল্যের নিকটতম রেজিস্ট্যান্স 1.3540 ব্রেক করাতে হবে। কেবল তখনই মূল্যের 1.3565-এর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা উন্মুক্ত হবে, যার ব্রেকআউট করে উপরের দিকে যাওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে। চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা হলো 1.3590। যদি পেয়ারটির মূল্য হ্রাস পায়, তবে মূল্য 1.3495 লেভেলে থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে। এই রেঞ্জ ব্রেক করা হলে তা ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণে গুরুতর আঘাত হানবে এবং GBP/USD পেয়ারের মূল্যকে 1.3470 লেভেলে নামিয়ে আনবে, যেখান থেকে 1.3440 পর্যন্ত দরপতন প্রসারিত হতে পারে।