সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ

GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট

সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে, যদিও EUR/USD পেয়ারের তুলনায় এটি কম সফল হয়েছে। তবুও, ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাস্তবিক অর্থে কোনো সমস্যা নেই। যদি গতকাল এই পেয়ারের মূল্য তেমন বৃদ্ধি পায়নি, তবে আজ মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। সামগ্রিকভাবে মার্কিন ডলারের দরপতন হতে থাকায়, এটি কেবল সময় এবং মোমেন্টাম পরিবর্তনের বিষয়। কখনো ইউরোর মূল্য জোরালোভাবে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়, আবার কখনো ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পায়।

গতকাল যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত প্রথম প্রান্তিকের জিডিপি প্রতিবেদনের তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক ফলাফল পরিলক্ষিত হয়েছে, যদিও তৃতীয় অনুমান দ্বিতীয়টির তুলনায় পরিবর্তিত হয়নি। তবুও, গত তিন বছরে ব্রিটিশ অর্থনীতির জন্য এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির হার। সম্ভবত এই একটি কারণেই পরবর্তী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়নি, তবে এটি ট্রেডারদের এই পেয়ারের ক্রয় অব্যাহত রাখতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। বর্তমানে ব্রিটিশ অর্থনীতি মার্কিন অর্থনীতির তুলনায় দ্রুততর গতিতে প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করছে—বা বলা ভালো, "ব্রিটিশ অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি প্রদর্শন করছে, যখন মার্কিন অর্থনীতি তা করছে না।"

GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, সোমবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে, এবং দিনের শেষে 1.3695 লেভেলটি সংশোধিত হয়ে 1.3682-এ নেমে এসেছে। প্রথম সেল সিগন্যালটি ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে, তবে দ্বিতীয় বাই সিগন্যালটি ট্রেডারদের প্রথম ট্রেডের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং সামান্য মুনাফা অর্জন করতে সাহায্য করেছে। নতুন ট্রেডারদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে একমুখী ও প্রায় রিট্রেসমেন্টবিহীন মুভমেন্ট সবসময় ভালো নয়, কারণ এতে কিছু লেভেল উপেক্ষিত থেকে যেতে পারে। মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা এখনও এই পেয়ার কিনেই যাচ্ছে।

মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:

ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার গৃহীত নীতিমালার ব্যাপারে ট্রেডারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা এখনও ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে অথবা আটলান্টিকের ওপার থেকে নতুন নেতিবাচক খবরের জন্য অপেক্ষা করছে, যেন তা ডলার বিক্রির যৌক্তিকতা নিশ্চিত করে। যতক্ষণ না বাস্তবিক অর্থে বাণিজ্যযুদ্ধ শেষ হওয়ার লক্ষণ দেখা যায় এবং ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ না করেন যেগুলো নেয়ার তার এখতিয়ার নেই, এবং যেগুলো ট্রেডারদের হতচকিত করে তোলে ততক্ষণ পর্যন্ত এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। ।

মঙ্গলবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম অব্যাহত থাকতে পারে, যেহেতু মার্কেটে এখন বুলিশ প্রবণতার একটি নতুন ধাপ শুরু হয়েছে। আগের মতোই, মার্কিন ডলারে বিনিয়োগ থেকে সরে আসার পক্ষে মৌলিক কারণের অভাব নেই।

৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3535, 1.3580–1.3592, 1.3643–1.3652, 1.3695, 1.3763, 1.3814–1.3832।

মঙ্গলবার, যুক্তরাজ্যে জুন মাসের ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন সংক্রান্ত PMI প্রকাশিত হবে এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বক্তব্য রাখবেন। যুক্তরাষ্ট্রে, ট্রেডাররা ISM ম্যানুফ্যাকচারিং PMI এবং ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের উপর দৃষ্টি দেবেন।

ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:

1. সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
2. ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
3. ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
4. ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
5. MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
6. নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
7. স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।

চার্টের মূল উপাদান:

সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।

লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।